বাংলাদেশ এবং ক্রাউডফান্ডিং!
বাংলাদেশ এবং ক্রাউডফান্ডিং!
ক্রাউডফান্ডিং হল একটা নির্দিষ্ট উদ্যোগে অনেক মানুষের আর্থিক কন্ট্রিবিউশন। কাজটা হতে পারে কোণ ব্যবসা, কোন সামাজিক উদ্যোগ, কারও চিকিৎসার অর্থায়ন, কারও শিক্ষাখাতের ব্যয় বা কারও বিদেশ ভ্রমণ। এরকম হাজারো বিষয়ে ক্রাউডফান্ডিং এর মাধ্যমে অর্থায়ন করা যায়, তবে কাজটা অর্থবহ হতে হবে। এখন কথা হল কেউ কেন আপনার উদ্যোগে টাকা দিবে? কারণ এক, যে প্রোডাক্ট, উদ্ভাবন বা সার্ভিস আপনি আনতে যাচ্ছেন, সেটা মানুষের দরকার। তাই তারা প্রি-অর্ডার হিসেবে টাকা দিবে। উদাহরণ স্বরূপ বিশ্বের প্রথম স্মার্ট ওয়াচ তৈরির পর এর উদ্যোক্তারা ক্রাউডফান্ডিং এর মাধ্যমে এর প্রোডাকশনের টাকা তুলে আনে। অর্থাৎ তারা একটা ক্যাম্পেইন করে সবাইকে জানায় তাঁদের ১ লাখ ডলার দরকার, তারা এটা পেলে প্রথম ১০০০ স্মার্টওয়াচ বানাতে পারবে, তাই ১০০০ জন ১০০ ডলারয়ে যাতে প্রি-অর্ডার করে। ২ মাস পর তারা ১ কোটি ২৬ হাজার ডলার ফান্ডরেইজ করে। অর্থাৎ ১০০ গুন বেশি মানুষ, ৭০ হাজার জন এটি পছন্দ করেছে, তারা চায় এটা মার্কেটে আসুক, তারা প্রি-অর্ডার এবং অনুদান দিয়েছে। লিংকঃ https://bit.ly/2VL7klr । এক্ষেত্রে উদ্যোক্তা কঞ্জিউমারের টাকা দিয়েই প্রোডাকশনে গেল, তারা এটাও বুঝল যে তাঁদের প্রোডাক্টের হিউজ ডিমান্ড মার্কেটে, মার্কেট সেগমেন্ট জেনেছে, প্রফিট করে পরবর্তী প্রোডাকশনেও যেতে পারবে। ক্রাউডফাইন্ডিং এর ক্ষেত্রে প্রোডাক্টের মার্কেটে আসলে যে দাম হবে, ক্রাউডফাইন্ডিং উপহার হিসেবে দাম ৫০-৭০% ধরতে হয়। বাংলাদেশের ওয়েজ রহিম Kickstarter এ ৭টা ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ১০ কোটি টাকার বেশি ফান্ডরেইজ করেছে টিশার্ট, মৌজা, আন্ডারওয়ার সহ বেশ কিছু প্রোডাক্টের জন্য, যা তৈরি হবে অডরলেস ফেব্রিক দিয়ে। লিংকঃ http://bit.ly/2poCt1Y । এমেরিকার কিছু স্টুডেন্ট বাংলাদেশে এসে বান্দরবনের কিছু মহিলার হাতে সুন্দর কাপড় বুনন দেখে সেই ফেব্রিক দিয়ে ওয়েস্টার্ন কাপড় বানানোর একটা প্রজেক্ট হাতে নেয়, The Tripty Project নামে, সেই প্রজেক্টের জন্য তারা ৩০ লাখ টাকা ফান্ডরেইজ করে, http://bit.ly/35Gs4Qf ।
আবার ধরুন ব্যক্তিগত কারণ যেমন চিকিৎসা, স্কুল বানানো, ভ্রমণ, এসব ক্ষেত্রে মানুষ কিছু পাওয়ার জন্য নয় বরং অনুদান হিসেবেই টাকা দেয়, তবে সেক্ষেত্রে আপনার স্টোরি অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য হতে হবে। যেমন আব্রারের জন্য ফেসবুক ফান্ডরেইজার প্ল্যাটফর্ম দিয়ে ৪২ লক্ষ টাকা ফান্ডরেইজ করা হচ্ছে, তিন দিনেই উঠেছে ৩২ লাখ টাকা। সবাই দিচ্ছে অনুদান হিসেবে http://bit.ly/33x5rvt । এমেরিকার এক ডাক্তার বাংলাদেশে ঘুরতে আসবে, সাথে ফ্রি চিকিৎসা দিবে, এজন্য সে ক্রাউডফাইন্ডিং করে ৩ হাজার ডলার http://bit.ly/2VKmabS । চট্টগ্রামের একজন একটি আর্ট সেন্টার করার জন্য StartSomeGood দিয়ে ২৭ হাজার ডলার ফান্ডরেইজ করেছে ২০১৪ তে, আর্টপ্রেমী মানুষেরা অনুদান দিয়েছে http://bit.ly/2qgCCFl
Lily নামে চাইনিজ শেখার একটা ডিভাইসের জন্য ১৪ লাখ ডলার ফাণ্ডপ্রেইজ হয়েছে। http://bit.ly/2pifh5D
এক ফটোগ্রাফার বাংলাদেশে ঘুরে ছবি তোলার জন্য তাঁর ট্রিপের খরচ হিসেবে ১০ হাজার ডলার ফান্ডরেইজ করে http://bit.ly/33BIV4P
বাংলাদেশ রিলেটেড আরও অনেক ক্যাম্পেইন আছে এখানে,http://bit.ly/2IRKoMo , http://bit.ly/2VIVN6l
২০১৭ তে আমরা নিজে ফেসবুক ফান্ডরেইজার দিয়ে ২৮০০ ডলার ফান্ডরেইজ করেছি বন্যার্থদের জন্য http://bit.ly/35D4Lqc
ক্রাউডফান্ডিং করে সিনেমা, গেইম, এপ, গ্যাজেট সব কিছুই বানানো সম্ভব। Star Citizen নামে একটা গেইমের জন্য ১১ কোটি ডলার ফান্ডরেইজ করা হয়েছে http://bit.ly/2Be6iVR ।
লেখাটা বড় হয়ে যাচ্ছে, এই পোস্টে ক্রাউডফান্ডিং এর সম্ভাবনা, কেইস স্টাডি দিলাম। পরের পোস্টে বাংলাদেশ থেকে কিভাবে ক্রাউডফান্ডিং করা যায়, কোন কোন প্ল্যাটফর্ম, ক্যাম্পেইন স্টোরি কন্টেন্ট, মার্কেটিং এন্ড প্রমোশন স্ট্র্যাটেজি, পেমেন্ট প্রসেস ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করব!
ক্রাউডফান্ডিংকে ঠিকভাবে ইউটিলাইজ করলে দেশের একটা পটেনশিয়াল আইডিয়াও ফান্ডিং এর অভাবে মুখ থুবড়ে পরবেনা।
Written By: Seban Shaan